শিক্ষার্থীদের নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনকে সামনে এনে নিরাপত্তার অজুহাত দেখিয়ে পরিবহন মালিক-শ্রমিক সংগঠনগুলো সিলেটে আঞ্চলিক সড়কগুলোতে বাস চলাচল বন্ধ রেখেছে। সেই সাথে বন্ধ রেখেছে দূরপাল্লার সকল কোচ সার্ভিস।
শুক্রবার সকাল থেকে সিলেটে সকল প্রকার যানবাহন বন্ধ রয়েছে। পূর্বঘোষণা ছাড়া হঠাৎ করে এভাবে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন যাত্রীরা। সিলেটের কদমতলী বাস টার্মিনালে অপেক্ষমান যাত্রীরা জানান, সকাল থেকে কোনো বাস টার্মিনাল ছেড়ে যায়নি। বাস চলাচল বন্ধ তা জানাছিলনা, স্ট্যান্ডে এসে জানতে পারলাম।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সিলেট অঞ্চলের এক নেতা বললেন, রাজধানীতে ছাত্ররা বাস ভাংচুর করছে, সিলেটে গতকাল থেকে এই আন্দোলন শুরু হয়েছে, সিলেটেও গাড়ি ভাংচুর হতে পারে এই আশঙ্কায় মালিকরা বাস চলাচল বন্ধ রেখেছেন।
সিলেট জেলা পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি সেলিম আহমদ ফলিক গণমাধ্যমকে বলেছেন, নিরাপত্তার অভাব থাকায় চালকরা গাড়ি বের করছেন না। ছাত্ররা অন্যায়ভাবে গাড়ি ভাংচুর করছে। তিনি অভিযোগ করে বলেন, ছাত্র-ছাত্রীরা চালকদের লাইসেন্স পরীক্ষা করছে, গাড়ির কাগজ-পত্র পরীক্ষা করছে, চালকদের গায়ে হাত দিচ্ছে তাদেরকে এ অধিকার দিল কে? অবিলম্বে ছাত্র-ছাত্রীদের রাস্তা থেকে সরাতে হবে। তা না হলে যান চলাচল স্বাভাবিক হবে না।
সিলেট বাস মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের কোষাধ্যক্ষ আব্দুল হক মানিক গণমাধ্যমকে বলেন, রাস্তায় বের হলেই শিক্ষার্থীরা ইচ্ছা মতো বাস ভাঙচুর করছে। এতে মালিকরা লাখ লাখ টাকা ক্ষতির মুখে পড়ছেন। তাই নিরাপত্তার অভাবে শুক্রবার ঢাকামুখী বাস চলাচল বন্ধ রাখা হয়। পাশাপাশি সিলেট আঞ্চলিক সড়কেও সকল প্রকার যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছে সারা দেশে। তারই ধারাবাহিকতায় গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে সিলেটে শুরু হয়েছে এই আন্দোলন। বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করছেন। গাড়ির ফিটনেস এবং চালকের বৈধ লাইসেন্স যাচাই করছেন। এরই প্রতিবাদে সিলেটসহ বিভিন্ন স্থানে যান চলাচল বন্ধ রেখেছে মালিক-শ্রমিক সংগঠনগুলো।
উল্লেখ্য, গত ২৯ জুলাই ঢাকায় বাসচাপায় দুই কলেজ শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার পর থেকে বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নেমে আসে। ফিটনেস ও বৈধ কাগজপত্র না থাকায় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বেশ কিছু গাড়ি ভাংচুর করে।